সারাদেশ ব্যাপি প্রচারের জন্য আপনার বিজ্ঞাপনের দিন

Header ADS
সংবাদ শিরোনাম=ভূরুঙ্গামারীতে গৃহবধু হত্যায় জড়িত ৪ জনকে আটক, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক ও আফগানের মতো শ্রীলঙ্কার হামলাও আমাদের আঘাত করেছে চরমোনাই পীর

বন্ধ হোক অ্যাম্বুলেন্স দৌরাত্ম


অ্যাম্বুলেন্সটির নাম ‘মানব সেবা’। কেড়ে নিল চার চারটি প্রাণ,ঢাকা  মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফটকে। শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটির চাপায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ও এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চারজন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে লাশ হয়ে যাওয়ার এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
দুর্ঘটনার সময় অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী সদ্য কৈশোর পেরুনো এক ছেলে। তখন জরুরি বিভাগের মূল ফটকের সামনে ভিড় ছিল। মূল প্রবেশপথের পুরোটাই দখল করে ছিল রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুতগতিতে ভেতরে ঢুকতে থাকে এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফটকে ধাক্কা লেগে লোকজনকে চাপা দেয়। পুলিশ  অ্যাম্বুলেন্স ও চালকের সহকারী ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করেছে। এখানে অ্যাম্বুলেন্সের মূল চালকও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন, তিনি তার অদক্ষ সহকারীর হাতে গাড়ির চাবি দিয়েছেন। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বলা হচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্সটির মালিকদের একজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয়। অভিযোগ আছে,যাঁরা এখানে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, রোগীরা তাঁদের কাছে জিম্মি। এটি একটি চক্র এবং দীর্ঘদিন ধরেই তারা রোগীদের জিম্মি করে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এ ধরনের অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিয়ে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা বহুবার প্রশ্ন তুলেছেন কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নি।
এ অভিযোগ কেবল ঢামেক হাসপাতালেই নয়। সারাদেশে সব সরকারি হাসপাতালের সামনে দেখা যায় অপেক্ষমান অ্যাম্বুলেন্স। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিরাই। অ্যাম্বুলেন্স সেবার নামে তারা রোগীদের জিম্মি করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। রোগী অথবা লাশ বহনে তারা অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে থাকেন- এ অভিযোগ নতুন নয়। রোগী ও লাশের স্বজনদের সাথে তাদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করে কোন ফল পাওয়া যায় না।
এই দুর্ঘটনার ভেতর দিয়ে আবারও ফুটে উঠেছে দেশের হাসপাতালগুলোতে নাজুক ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির চিত্র। পুরো চিকিৎসা খাতটাই মূলত সেবাখাত। আর এই সেবাখাতের অপরিহার্য অংশ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। কিন্তু এখানে সেবার বদলে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে করা হচ্ছে ব্যবসা। চক্র সৃষ্টি করে জিম্মি করা হচ্ছে মানুষকে। কাঙ্ক্ষিত সেবা দূরের কথা, মানুষ এদের কাছে অর্থ ও সম্মান এমনকি প্রাণ পর্যন্ত হারাচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের ফটকে এমন করুণ চিত্র একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে,আমরা এ আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.