সারাদেশ ব্যাপি প্রচারের জন্য আপনার বিজ্ঞাপনের দিন

Header ADS
সংবাদ শিরোনাম=ভূরুঙ্গামারীতে গৃহবধু হত্যায় জড়িত ৪ জনকে আটক, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক ও আফগানের মতো শ্রীলঙ্কার হামলাও আমাদের আঘাত করেছে চরমোনাই পীর
রংপুর প্রতিনিধী


দৈনিক উত্তরের খবরঃ- রংপুর মহানগরীর দর্শনামোড় হয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার উপর দিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার। প্রায় ২০ বছর আগে পাকা করা হয়েছিল সড়কটি। এরপর থেকে আর সংস্কার না করায় সড়কের বিটুমিন (পিচ) উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একারণে সব ধরনের যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ব্যাস্ততম সড়কটি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা এই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে চরম জনদুর্ভোগের সৃষ্টি। সড়কটির ১০ কিলোমিটারে ৫ শতাধিক বড় বড় গর্ত ও খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী, ব্যবসায়ী ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের। চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি ভোগান্তির কারণ হলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। এরফলে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। রাণীপুকুরের রিক্সা-ভ্যান চালক কলিমুল্লাহ্ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাহে, তোমরা তো পেপারোত অনেক কিছু লেখেন। হামার সড়কটার কথা একনা লেখপার পারেন না? এই সড়কটির কি বাপ-মা নাই? তার মত গোপালপুর ইউনিয়নের বান্দেরপাড়া বাবুরহাট এলাকায় চাষি মাহিদুল ইসলাম আউলিয়া, রবিউল ইসলাম, শাল্টিপাড়ার আবদুল মজিদ খন্দকার, মোকলেছার রহমান, বাদশা মিয়াও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মিঠাপুকুর উপজেলার এরশাদ মোড় হতে ভেন্ডাবাড়ী পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত। এরমধ্যে এরশাদ মোড় এলাকায় এক কিলোমিটার সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বছরের প্রায় ১০ মাসই পানি জমে থাকে সেখানে। শুকুরেরহাট, মোসলেমবাজার, শাল্টি ছ মিল, শাল্টিগোপালপুর, এলাকায় বাস-ট্রাক তো দুরের কথা রিক্সা-ভ্যানও চলেনা। আশপাশের গ্রামের মানুষ নেহাতই প্রয়োজন ছাড়া এ সড়কে পা বাড়ান না। কিছু দিন আগে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থেকে মিঠাপুকুর উপজেলার মোসলেম বাজার হয়ে রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিটালে সরাসরি বাস চলাচল করত। কিন্তু সড়কের এ বেহাল দশার কারণে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিক সমিতি। ফলে অারো চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।শ্রমিক আবদুর জব্বার বলেন, সড়কের যে অবস্থা, তাতে গাড়ি আর চলেনা। তাই বাধ্য হয়ে এই রুটে বাস বন্ধ করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি দিয়ে রংপুর জেলার সদর, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর এবং দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ১০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিনিয়তই যাওয়া আসা করে। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না করার ফলে অনেক আগেই উঠে গেছে বিটুমিনের কার্পেট। খোয়া-বালু মিশে গেছে পানির সাথে। বাস চালক হাকিম মিয়া, মনোয়ার হোসেন বলেন, এটি ব্যস্ততম সড়ক। ভেন্ডাবাড়ী থেকে মিঠাপুকুর সীমানা নাসিরাবাদ ইটভাটা পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা একেবারেরই নাজুক। ছোট-বড় গর্তের কারণে ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। রাণীপুকুর এলাকার মাইক্রোবাস চালক সাইফুল ইসলাম ও তাওফিক অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে যাচ্ছে হাঁটু পানি। দিনের পর দিন দূর্ভোগ যেন বেড়েই চলছে। এরশাদ মোড় এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহমুদ, নাসিম, পথচারী আরিফুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, সড়কটি এখন আমাদের গলার কাটা হয়ে আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার না করা হলে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে। রাণীপুকুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাগর, ফুয়াদ, মুনতাছির মামুন, আব্দুর রাজ্জাক ও হাসান আলী বলেন, সারা বছরই সড়কের এরশাদ এলাকায় পানি জমে থাকে। জলাবদ্ধতা ও কাদার করণে পায়ের জুতা হাতে নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, রাণীপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ময়েনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, চেংমারী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল কবীর টুটুল ও গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম পাইকাড় দিলিপ বলেন, সড়কটি খুই গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটির মিঠাপুকুর উপজেলা অংশের ৫ ইউনিয়নের যোগাযোগ রক্ষাকারী একমাত্র সড়ক একটি। শুধু সংস্কার নয়- আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করা এখন সময়ে দাবি মাত্র । উপজেলা প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সড়কটি আরও প্রশস্ত করে সংস্কারের জন্য জেলা অফিস থেকে ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনও নিয়োগ হয়নি। আশা করছি, খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।

No comments

Powered by Blogger.