মেয়াদ উর্ত্তীন সোনাহাট সেতুতে ঝুকি নিয়ে পারাপার
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা
দৈনিক উত্তরের খবরঃ- কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মেয়াদ উর্ত্তীন সোনাহাট সেতুটি যেন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় রকমের র্দূঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে জেলার একমাত্র স্থল বন্দর সোনাহাট স্থল বন্দরের কার্যক্রম। মেয়াদ উর্ত্তীন ঝুকি পূর্ন সোনাহাট সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। উপজেলা এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা গেছে, বিট্রিশ শাসনামলে সৈন্য ও রসদ সরবরাহ করার জন্য ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গোহাটি পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নে দুধকুমার নদের উপর নির্মিত হয় ১২শ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্থানীয়ভাবে সেতুটি পাটেশ্বরী ব্রিজ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর প্রবেশ ঠেকাতে ব্রিজের দুটি অংশ ভেঙ্গে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের সময়ে ব্রিজটি মেরামত করে সড়ক সেতু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেতুটি র্নিমানের সময় আয়ুস্কাল ধরা হয়েছিল ১০০শ বছর। সে মোতাবেক সেতুটির মেয়াদ উর্ত্তীন হয়েছে ৩৩ বছর আগে। সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচল করছে। ভারী যানবাহন চলাচল করায় মেয়াদ উর্ত্তীন সেতুটিতে ছোট বড় র্দুঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। সরেজমিনে দেখা গেছে সেতুটির পাটাতনের জোড়া অনেক জায়গায় ছুটে গেছে। যান বাহন চলাচলের সময় সেতুটি থর থর করে কাপতে থাকে। হাজারো জোড়া তালি দেওয়া সেতুটির পাটাতন ভেঙ্গে যানবাহন সমেত মানুষ নদীতে পরে গিয়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের র্দুঘটনা। সোনাহাট স্থল বন্দরের আমদানী ও রপ্তানী কারক ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সেতুটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সেকোন সময় সেতুটি ভেঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যেতে পারে। এতে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে ব্যবসায়ীরা মারাতœক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হবেন। আর সোনাহাট স্থল বন্দর বন্ধ হলে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পরবেন। সোনাহাট সেতুর এই দৈন্যদশার কারণে তা জরুরীভাবে মেরামতের জন্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারী থেকে আগামী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ২ মাস সময়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ১২ ঘন্টা করে সকল ধরনের যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগ। এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুন্নবী চৌধুরী খোকন বলেন, সেতুটির মেয়াদ ৩৩ বছর পূর্বে শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে এটির অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। সেতুটি দিয়ে এক সাথে দুটি পণ্য বোঝাই ট্র্যাক চলাচল করলে তা ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। সেতুটি ভেঙ্গে গেলে সোনাহাট স্থল বন্দরের কার্যক্রম সহ, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুধ কুমার নদের উপর বিকল্প সেতু র্নিমাণের প্রকল্পটি খুব দ্রুত বাস্তবায়নের জোড় দাবী জানান তিনি। এব্যাপারে জানতে চাইলে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমীর হোসেন জানান, দুধ কুমার নদের উপর একটি বিকল্প সেতু নির্মাণ করার জন্য ২৪৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এই প্রকল্পটি আশা করছি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।
No comments